ই পাসপোর্ট কথাটা আমরা বেশ কিছু আগে থেকে শুনে আসছি। এর কারণ গত বছরেই অর্থাৎ ২০১৯ সালের জুলাই মাসের দিকেই ই-পাসপোর্ট চালু করার কথা ছিল। কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে সেই তারিখ পিছিয়ে যায়। অবশেষে মুজিব বর্ষ ২০২০ এর অন্যতম নতুন সংযোজন হিসেবে ২২ জানুয়ারী ২০২০ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক ভাবে ই-পাসপোর্ট কর্মসূচীর উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এখন থেকে যেকোন বাংলাদেশী প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিক সব শর্ত পূরণ সাপেক্ষে ই- পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। উল্লেখ্য এই যে দক্ষিন এশিয়ার প্রথম দেশ এবং পৃথিবীর ১২০ তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রবেশ করল ই- পাসপোর্টের যুগে। সবার আগে এই প্রযুক্তি এনেছিল মালয়েশিয়া, ১৯৯৬ সালে।

ই- পাসপোর্ট কি
সহজ ভাষায় ই পাসপোর্ট আর মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের মধ্যে পার্থক্য অনেকটা এটিএম কার্ড ও চেক বই এর মত। চেক ব্যাবহার করে যেমন গ্রাহক নিজে একা একা টাকা তুলতে পারে না। এজন্য সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সীল, সাক্ষর ইত্যাদি লাগে। কিন্তু এ টি এম কার্ড ব্যাবহার করে গ্রাহক এসব ঝামেলা ছাড়াই নিজের টাকা তুলতে পারেন। ই পাসপোর্টের সার্ভিস অনেকটা এটিএম কার্ডের মত।

ই পাসপোর্ট হল একটি পাসপোর্ট যাতে ইলেক্ট্রনিক মাইক্রো প্রোসেসর চিপ লাগানো থাকবে। আপাতত দৃষ্টিতে পাসপোর্ট বইটি দেখে কোন কিছু বুঝা যাবে না। দেখতেও অনেকটা MRP পাসপোর্টের মতই। কিন্তু ভিতরে সংযুক্ত চিপটি এম আর পি (মেশিন রিডেবোল পাসপোর্ট) আর ই পাসপোর্টের মধ্যেকার প্রধান পার্থক্য সৃষ্টি করেছে। এই চিপের মধ্যে আছে বায়োমেট্রিক তথ্য যা পাসপোর্টধারীর যাবতীয় তথ্য বহন করে। এতে মাইক্রো প্রসেসর চিপ এবং অ্যান্টেনা সহ স্মার্ট কার্ডের প্রযুক্তি ব্যাবহার করা হয়ে থাকে।
বর্তমানে ই পাসপোর্টে যে সব বায়মেট্রিক সংরক্ষণে থাকবে তা হল পাসপোর্ট ধারীর ছবি, ১০ আঙ্গুলের ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং চোখের আইরিশ।ই বর্ডার বা ইলেক্ট্রনিক বর্ডার কন্ট্রোল সিস্টেমের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক যাচাই করা হয়ে থাকে। পাব্লিক কিই ইনফ্রাস্ট্রাকচার (PKI) এর মাধ্যমে চিপে সংরক্ষিত ডাটা যাচাই করা হয়ে থাকে। এতে থাকবে পাসপোর্টধারীর ৩ ধরনের ছবি, ১০ আঙ্গুলের ছাপ এবং চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি।

ই পাসপোর্টে কি সুবিধা
ই পাসপোর্টের সবচাইতে বড় সুবিধা হল ই পাসপোর্টধারীরা বিশেষ ই – গেট ব্যাবহার করে খুব দ্রুত ইমিগ্রেশন পার হতে পারবেন। এজন্য তাদেরকে ভিসা চেকিং এর লাইনের দাড়াতে হবে না। এতে করে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া খুব দ্রুত শেষ হবে। উল্লেখ্য যে এই ই – গেট শুধুমাত্র ই পাসপোর্টধারীরাই ব্যাবহার করতে পারবেন
ই গেটের কাছে দাড়িয়ে নির্দিষ্ট স্থানে পাসপোর্ট রাখলে স্বয়ংক্রিয় ভাবে ছবি তুলে নেয়া হবে। এর পর আঙ্গুলের ছাপ পরিক্ষা করে নেয়া হবে সহজেই। কোন সমস্যা না থাকলে খুব দ্রুত শেষ হবে ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া। আর কোন ঝামেলা থাকলে লাল বাতি জলে উঠবে এবং পাসপোর্টধারীকে সমস্যা সমাধান না হউয়া পর্যন্ত ইমিগ্রেশন পার হতে দেয়া হবে না।

এই সিস্টেমের পরিচালিত হবে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অরগানাইজেশন (আইসিএও) দ্বারা। একারণে সেন্ট্রাল ডাটাবেজ থেকে দেশের পুলিশ প্রশাসন, ইন্টারপোল ও বিভিন্ন বিমান বন্দর ও স্থলবন্দর অথোরিটি সহজেই এই সব তথ্য যাচাই করতে পারবে। এই পদ্ধতিতে ৩৮ লেয়ার বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যাবস্থা থাকায় কোন জাল বা সমস্যা যুক্ত পাসপোর্টধারী এই নিরাপত্তা ব্যুহ অতিক্রম করতে পারবে না। এতে করে সন্ত্রাসবাদ সহ অন্যান্য অপরাধ প্রবণতা অনেকাংশেই কমে যাবে এটা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়।

ই পাসপোর্ট এর মেয়াদ, বিতরনের সময় এবং ফি সমূহ
৪৮ পৃষ্ঠার ৫ বছরের জন্য সাধারণ ফি (১৫ দিন) সাড়ে তিন হাজার টাকা।
জরুরি ফি (৭ দিন) সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা।
অতি জরুরি ফি (২ দিন) সাড়ে সাত হাজার টাকা।
৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট ১০ বছরের জন্য সাধারণ (১৫ দিন) ফি পাঁচ হাজার টাকা,
জরুরি ফি (৭ দিন) সাত হাজার টাকা
অতি জরুরি ফি (২ দিন) নয় হাজার টাকা।
৬৪ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট ৫ বছরের সাধারণ ফি সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা,
জরুরি ফি সাড়ে সাত হাজার টাকা
অতি জরুরি ফি (২ দিন) সাড়ে ১০ হাজার টাকা।
৬৪ পৃষ্ঠার ১০ বছরের জন্য সাধারণ ফি সাত হাজার টাকা
জরুরি ফি (৭ দিন) নয় হাজার টাকা
অতি জরুরি ফি (২দিন) ১২ হাজার টাকা।
এই ফি এর সাথে যথারিতি ১৫% ভ্যাট যুক্ত হবে।
ই পাসপোর্ট করতে কি লাগবে
ই পাসপোর্ট করতে আবেদনকারীর নিম্ন লিখিত কাগজ পত্র লাগবে
- ই পাসপোর্ট আবেদন ফর্ম
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
- জন্ম নিবন্ধন পত্র
ই পাসপোর্ট আবেদন ফর্ম কিছুদিনের মধ্যেই সরকারি ওয়েবসাইটে দেয়া যাবে, যা পিডি এফ ফরম্যাটে ডাউনলোড করে নেয়া যাবে। ফর্মটি অবশই জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য অনুযায়ী পূরণ করতে হবে। এতে কোন ছবি বা সত্যায়নের প্রয়োজন হবে না। আবেদন পত্র নির্দিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে জমা দেবার সময় দশ আঙ্গুলের ছাপ, আইরিশের ছবি ও আবেদনকারীর ছবি তোলা হবে। এর পর যথারিতি পুলিশ ভেরিফিকেশনেরও প্রয়োজন হবে। আবেদনকারীর বয়স ১৮ এর নিচে হলে পিতা এবং মাতার ন্যাশনাল আইডি নম্বর অবশ্যই দিতে হবে।
ই পাসপোর্টের জন্য বাংলাদেশ সরকার বিশেষ ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন যেখানে সব তথ্য মিলবেঃ https://epassport.gov.bd/landing
এই ব্লগ লেখার সময় পর্যন্ত ওয়েব সাইটের কাজ তখনো চলতেছিল।
এম আর পি (মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট) এর কি হবে?
এখন যারা এম আর পি ব্যবহার করছেন তাদের কোন সমস্যা হবে না। তবে নতুন করে আর কাউকে এম আর পি ইস্যু করা হবে না। এর অর্থ হল এখন থেকে যারা পাসপোর্ট করবেন তারা সরাসরি ই – পাসপোর্টই করবেন। এভাবে পর্যায়ক্রমে সব এম আর পি পাসপোর্ট তুলে নেয়া হবে। যাদের এম আর পি এর মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে তারা পাসপোর্ট রিনিউ করতে গেলে সব তথ্য যাচাই করে ই -পাসপোর্ট দিয়ে দেয়া হবে।
আজকের ব্লগে ই পাসপোর্ট নিয়ে যতটা জানি তা শেয়ার করার চেষ্টা করলাম। কারো কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট সেকশনে করতে পারেন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উত্তর দেবার চেষ্টা করব।
ফ্লাইট এক্সপার্ট আপনাকে দিচ্ছে সীমিত খরচে উমরাহ প্যাকেজ সহ খরচে পৃথিবীর প্রায় সকল দেশে হোটেল সুবিধা। তার মানে দেশে থেকেই আপনি বিমান টিকিট ও হোটেল একসাথে বুক করে ফেলতে পারবেন। টিকিট বা হোটেলের খরচ মিলে অনেক বেশী মনে হচ্ছে? কোন চিন্তা নেই! বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মত ফ্লাইট এক্সপার্ট দিচ্ছে বিমান টিকিট এবং হোটেলের উপর EMI সুবিধা। সরবচ্চ ৩৬ মাসের Travel EMI সুবিধা পাবেন অতি সহজেই। Travel EMI সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুনঃ https://www.flightexpert.com/emi.html
ফ্লাইট এবং হোটেল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে কল করুনঃ +88-09617-111-888 অথবা ভিজিট করুন www.flightexpert.com
অথবা সরাসরি চলে আসুন আমাদের অফিসেঃ
ঢাকা অফিস
Flight Expert Dhaka (Main branch)
90/1 Motijheel City Centre
Lift 26
Dhaka 1000, Bangladesh
চট্টগ্রাম অফিস
Flight Expert (Chattogram)
Level# 4, Ayub Trade Center
1269/B, Sk Mujib Road
Agrabad C/A, Chattogram